টাকা উপার্জন করার কথা বললেই প্রথমেই মাথায় আসে একটা চাকরির কথা। সেটা সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো ক্ষেত্রেই হতে পারে। চট করে কেউ এতদিন একটা ব্যবসা করার কথা ভাবতে পারতো না। আর চাকরির কথা যদি বলা যায়, সেক্ষেত্রে গ্রাম থেকে শহরাঞ্চলের যুবক-যুবতীরাই বেশ কিছুটা এগিয়ে থাকতে পারে।
তার কারণ, শহরাঞ্চলে হাতের কাছেই সব সুযোগ পাওয়া যেতে পারে। গ্রামের তুলনায় সেখানকার যুবক-যুবতীদের কাছে অনেক কিছুই সহজলভ্য। সেই জায়গায় গ্রামীণ ছেলে মেয়েদের যথেষ্ট কঠিন লড়াই করতে হয়।
তবে ব্যবসা হোক বা চাকরি, যে ক্ষেত্রের কথাই বলা হোক না কেন, গ্রাম বা শহর যেকোনো ছেলেমেয়ের কাছেই সঠিক পরিশ্রম করে সঠিক পদ্ধতি প্রয়োগ না করতে পারলে সফল হওয়া সম্ভব নয়। গ্রামেও এমন কিছু সুযোগ আছে যা শহরে নেই। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গ্রামাঞ্চলের ছেলেমেয়েরা মোটা টাকা উপার্জন করতে পারেন। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন।
চাকরির বাজার যখন যথেষ্ট খারাপ, ইদানিং দেখা যাচ্ছে, বহু ছেলেমেয়ে কিছু একটা ব্যবসা করার কথা ভাবছেন। এবার ব্যবসার কথা বলা হলেই দোকান বা কোনো মেশিনের দ্বারা কোনো কিছু তৈরি করা অর্থাৎ ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটের এই পরিকল্পনাগুলোই সাধারণত মাথায় আসে।
কিন্তু কৃষিকাজের মাধ্যমে যে ব্যবসা হতে পারে, যা একমাত্র গ্রামাঞ্চলেই সম্ভব, সেটা হয়তো অনেকের মাথাতেই আসে না। এমনকি গ্রামের যুবক যুবতীদের মাথাতেও নয়। তাই এখানে এমন একটি ব্যবসার আলোচনা করা হবে, সেটি একটি কৃষিকাজ সম্পর্কিত ব্যবসা।
চাষবাস মূলত গ্রামেই হয়ে থাকে। ফলে কোনো ফসল চাষ করেই একজন মোটা টাকা উপার্জন করতে পারেন। আর সেটাও সম্ভব গ্রামাঞ্চলে। কারণ ন্যূনতম চাষবাস সম্বন্ধে একটু ধারণা থাকার প্রয়োজন। এমন একটি ফসলের চাষের কথা বলা হবে, যার মাধ্যমে কেউ একটু সঠিক ভাবে পরিশ্রম করলে প্রায় লাখ টাকা আয় করতে পারেন।
কারণ এই ফসলের দাম সারা বছরই যথেষ্ট বেশি থাকে। আর এর চাহিদা সারা বছর সবসময়। কখনোই এর চাহিদা কমার নয়। গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করে থাকেন। কিন্তু এই ফসলের চাষ করে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হতে পারবেন।
যে ফসল চাষের কথা বলা হচ্ছে, সেটি হল জিরা চাষ। নাম শুনেই বুঝতে পারছেন, প্রতিটি বাড়ির রান্নাঘরে এই মশলার অবাধ যাতায়াত। অধিকাংশ রান্নাই জিরা ছাড়া করা সম্ভব নয়। তাছাড়া এর বহু ঔষধি গুন রয়েছে। একদিকে রান্নায় মশলা হিসেবে ব্যবহার হয় জিরা, অন্যদিকে এর ঔষধি গুন থাকার কারণে ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ফলে সারা বছর সব সময় জিরার চাহিদা বাজারে থাকবেই।
যেহেতু এই ব্যবসা করতে গেলে চাষ করতে হবে, ফলে প্রথমেই কোন জমিতে, কিভাবে চাষ করলে, জিরা চাষ ভালো হবে, সেটা জেনে নিতে হবে।
যে জমিতে জিরা চাষ করা হবে, সেক্ষেত্রে জমিতে হালকা এবং দোআঁশ মাটি থাকার প্রয়োজন। জিরা চাষের জন্য এই ধরনের মাটির ব্যবহার করলে ফসল ভালো উৎপাদন হয়। জিরা চাষের বীজ বপন করার আগে জমি সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। যে জমিতে জিরা বীজ রোপন করা হবে, সেখানে জমি খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। কোনোরকম আগাছা থাকলে চলবে না। কারণ জমিতে আগাছা থাকলে সেই জমিতে জিরা ভালোভাবে বড় হতে পারে না।
প্রথমেই জেনে রাখা দরকার, জিরার অনেক ধরনের জাত রয়েছে। যেকোনো জাতের জিরা চাষ করা যেতে পারে। প্রথমত,RZ-19 জাতের জিরা ফসল চাষ করলে প্রতি হেক্টরে ৯ থেকে ১১ কুইন্টাল জিরা উৎপাদিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ১২০ থেকে ১২৫ দিনের মধ্যেই এই জিরা তোলার উপযুক্ত হয়ে যাবে।
দ্বিতীয়তঃ RZ-209 জাতের জিরা ১২০ থেকে ১২৫ দিনের মধ্যে তোলার উপযুক্ত হয়ে যায়। এই জাতের জিরা প্রতি হেক্টরে ৭ থেকে ৮ কুইন্টাল ফলন পাওয়া যায়। এই জিরার দানা একটু মোটা ধরনের।
তৃতীয়তঃ GC-4 জাতের জিরা ১০৫ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে তোলার উপযুক্ত হয়ে যায়। এটি প্রতি হেক্টরে ৭ থেকে ৯ কুইন্টাল পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এই জাতের জিরার বীজ একটু বড় আকারের হয়।
চতুর্থত, RZ-223 জাতের জিরা প্রতি হেক্টরে ৬ থেকে ৮ কুইন্টাল পর্যন্ত উৎপাদন হয়। এই জাতের জিরা ১১০ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যে তোলার জন্য উপযুক্ত হয়।
গ্রামাঞ্চলের নিকটবর্তী বাজারে যেকোনো সার, বীজের দোকানে জিরার বীজ পাওয়া যায়। সেখানে গিয়ে বলতে হবে, কোন জাতের জিরা আপনি চাষ করতে চান। নির্দিষ্ট জাতের জিরা বীজ কিনে রোপন করলেই উপরে দেওয়া ফলনের নিয়ম অনুযায়ী উৎপাদন হবে।
সাধারণত গড়ে ধরে নেওয়া যায় প্রতি হেক্টরে জিরা চাষে ৭ থেকে ৮ কুইন্টাল বীজ পাওয়া যায়। প্রতি হেক্টরে জিরা চাষ করতে প্রায় ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হতে পারে অর্থাৎ এই টাকাটাই মূলধন হিসেবে ধরা যেতে পারে। কারণ তার মধ্যেই জমির চাষের জন্য প্রস্তুতির খরচ ধরা রয়েছে।
জিরার দাম সব সময়ই ওঠা নামা করে। তবে গড়ে সারা বছর এর সর্বনিম্ন দাম প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ধরা যায়। এবার এক হেক্টর জমির হিসেবে জিরা চাষ করলে খুব সহজেই ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। যেহেতু জিরার সারা বছর চাহিদা থাকে সেই কারণে জিরা চাষে সাধারণত কখনো লোকসান দেখা যায় না।
জিরা বিক্রি নিয়ে ভাবার কোনো কারণ নেই।স্থানীয় বাজারে পাইকারি এবং খুচরো যেভাবে আপনি চাইবেন সেভাবেই বিক্রি করতে পারবেন।
যদি আপনার এই প্রতিবেদনটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই খবরটি শেয়ার করবেন । আপনি চাইলে আমাদের Whatsapp গ্রুপে যুক্ত হতে পারেন ।সেখানে নিয়মিত শিক্ষা, চাকরি , ব্যবসা , চাষবাস , সরকারি প্রকল্প , ব্যাঙ্ক তথা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন্ডিং খবরের আপডেট পেয়ে যাবেন ।
This post was last modified on January 12, 2023 10:53 am
Paper Plate Business Idea Paper Plate Business Idea : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা…
Soap Making Business Plan Soap Making Business Plan : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা…
RD Scheme in Post Office RD Scheme in Post Office : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই…
Popcorn Business Plan Popcorn Business Plan : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা আপনাদের সামনে…
PhonePe Earning Tricks PhonePe Earning Tricks : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা আপনাদের সামনে বিভিন্ন…
Lemon Grass Cultivation Lemon Grass Cultivation : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা আপনাদের সামনে…