বন্ধুরা এবছরের মে মাসে খবর আসছিল কয়লার ঘাটতির । আর এই কয়লা ক্রাইসিসের জন্য বিদ্যুতের ক্রাইসিস দেখা যাচ্ছিল । খবরে প্রকাশ এসময় অন্ধ্রপ্রদেশের সরকার জনগণের কাছে রিকুয়েস্ট করেছে সন্ধ্যে ৬ টার পর এসি অফ রাখতে যাতে বিদ্যুতের ঘাটতি কিছুটা হলেও মেটানো যায় ।
রাজস্থান এবং পাঞ্জাবের মত রাজ্যে খবর পাওয়া যাচ্ছিল নিয়মিতভাবে পাওয়ার কাট এর । আর বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের মত রাজ্যে তো ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার পাওয়ার কাট দেখা যাচ্ছিল প্রতিদিন ।
তাহলে এসবের আসল কারন কি যার জন্য কয়লার ঘাটতি দেখা দিয়েছে । এবং এর থেকে বাঁচার উপায় বা কি ? আপনি একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে কি করতে পারেন ? সোলার পাওয়ারের এখানে কি ভূমিকা রয়েছে ?
বন্ধুরা সব থেকে মজার বিষয় হল এটা শুধু ভারতের নয় সারা বিশ্ব এখন কয়লার ঘাটতি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে । কিছুদিন আগে লেবানন নামক একটি দেশে জ্বালানির অভাবে সারা দেশজুড়ে ব্লাকআউট হয়ে গেছিল । সমগ্র ইউরোপ মহাদেশ ও একমাস আগে বিদ্যুৎ ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছিল । এইবছর ইউরোপে গরমকাল একটু বেশি ঠাণ্ডা ছিল । যার ফলে প্রাকৃতিক গ্যাসের যে চাহিদা তা অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল ।এবং এরফলে প্রাকৃতিক গ্যাসের যে দাম তা অনেকটা বেড়ে গেছিল ।সেকারণে বেশকিছু ইউরোপীয় দেশ যেমন ইংল্যান্ড বন্ধ হয়ে যাওয়া কয়লার দ্বারা উৎপাদিত অর্থাৎ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিকে নতুন করে চালু করতে বাধ্য হয় ।
কারণ দেশে যে বিদ্যুতের চাহিদা তা মেটাতে পারছিল না ইংল্যান্ড ।
আর এসবের কারনে কয়লার চাহিদা বাড়ায় তাঁর দামও বেড়ে যায় । একইরকম সমস্যার সম্মুখীন বর্তমানে চীনও হয়েছে । যদিও তাঁর কারন কিছুটা আলাদা । সবমিলিয়ে বলা যায় সারা বিশ্ব জুড়ে কয়লার দাম বেরেছে । এমনকি একটি রিপোর্ট বলছে বর্তমানে ১৩ বছরের রেকর্ড দাম বেরেছে কয়লার ।
তো বন্ধুরা এবার এই পরিস্থিতিতে আমরা ভারতের দিকে নজর দি । এখানে একটি জিনিস বলে দি চীন এবং ভারত কয়লা উৎপাদনে প্রথম এবং দ্বিতীয় । একইসাথে কয়লার ব্যবহারেও চীন এবং ভারতের স্থান প্রথম এবং দ্বিতীয় । তাই ভারত কয়লা উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করলেও বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করতে হয় ।যদি তথ্যের কথা বলি তাহলে ২০১৯ – ২০ সালে যে কয়লা ব্যবহার হয়েছিল তাঁর ৭৩ শতাংশ আমদের দেশে থেকেই এসেছিল । অন্যদিকে ২৭ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছিল ।
এখন ভারতে কয়লার ঘাটতির কারন কি তা জেনে নেওয়া যাক । প্রথম কারন গতবছর লকডাউন থাকার কারনে দেশের বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটাই কমে গিয়েছিল । কিন্তু ২০২১ সালে আবারো অর্থনীতি আসতে আসতে স্বাভাবিক হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে ।
এদিকে আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে কয়লা থেকে । তাই বিদ্যুতের চাহিদা বারলে কয়লার চাহিদাও স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে ।
দ্বিতীয় কারন হল এখন একদিকে যখন চাহিদা বারছে তখন অন্যদিকে আবার যোগানও কমে যাচ্ছে । তাঁর মুল কারন আগেই বলেছি সারা বিশ্বজুড়ে কয়লার দাম বেরেছে । আর সেকারণে ভারত কয়লার আমদানিও কমিয়ে দিয়েছে ।তথ্য বলছে গত আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে ভারত যে কয়লা আমদানি করেছে তা গত সাতমাসের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কম । আরও একটি তথ্য বলছে ২০২০ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ কয়লা কম আমদানি করা হয়েছে ২০২১ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ।
তাহলে যেখানে চাহিদা বারছে , অন্যদিকে আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানে যোগান স্বাভাবিক রাখার জন্য একটি উপায় হল দেশের ভিতর যে কয়লাখনি গুলি রয়েছে তাঁর উৎপাদন বাড়ানো দরকার । কিন্তু দেখা যাচ্ছে এক্ষেত্রে ঠিক তাঁর উলটো ঘটেছে । অর্থাৎ দেশের কয়লার উৎপাদন বাড়ার বদলে কমে গিয়েছে ।তাঁর একটি কারন অবশ্য অত্যাধিক বর্ষার কারনে বিভিন্ন কয়লা খনির মধ্যে জল ঢুকে গেছে ।
কয়লার ঘাটতির আরও একটি কারন হল কেন্দ্রীয় পাওয়ার ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে জানানো হয়েছে বর্ষা আসার আগে কয়েকটি রাজ্য যথোপযুক্ত কয়লার সঞ্চয় করে রাখে নি ।
তো এই সবকিছুর কারনে ভারতে কি প্রভাব পরতে পারে ? অনুমান করা যাচ্ছে এসবের কারনে বেশ কয়েকটি রাজ্যের ক্ষেত্রে সারা রাজ্য জুড়ে বিদ্যুতের কাট অফ দেখা দিতে পারে ।
মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে প্রায় ১৩ টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কয়লার অভাবের কারনে । সাথে সাথে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে উপভোক্তারা যেন বিদ্যুতের ব্যবহার বুঝেশুনে করে ।
পাঞ্জাব এবং রাজস্থান অফিসিয়ালি ঘোষণা করে দিয়েছে প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ থাকবে না ।
বিহার এবং ঝাড়খণ্ডে হয়তো সব থেকে ভয়ানক অবস্থা । বিহারের মানুষ বলছে কিছুদিন ধরে ৭ -৮ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকছে না । বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমারও মেনে নিয়েছে যে তাঁর রাজ্যে বর্তমানে বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে । আগামী কয়েকদিনে হয়তো দিল্লী , গুজরাত , হারিয়ানা , উত্তরপ্রদেশেও বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিতে পারে ।
তো আপনি যদি এতদুর পর্যন্ত পড়ে ফেলেছেন এবং এখানে কোথাও পশ্চিমবঙ্গের নাম হয়ত দেখতে পাননি । তাই হয়তো আপনি একটু হলেও নিশ্চিন্ত রয়েছেন । কিন্তু মনে রাখবেন বাংলায় একটি প্রবাদ রয়েছে ঘুটে পোড়ে গোবর হাসে , গোবরের আবার সেদিন আসে । আসলে আপনি হয়ত বিদ্যুৎ ঘাটতি বোধ করেননি বলে খুশি হয়েছেন । তাঁর হয়তো একটি মুল কারন পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে সেভাবে বড় শিল্প নেই । সেকারণে হয়তো বিদ্যুতের ঘাটতি এখনও সেভাবে দেখেননি । কিন্তু জেনে রাখুন পাশের বাড়িতে আগুন লাগলে তাঁর আঁচ আপনার বাড়িতে এসে পরতে বাধ্য ।
এখন প্রশ্ন হল এই বিদ্যুৎ ঘাটতি থেকে মুক্তির উপায় কি । দুইভাবে এটা দেখা যেতে পারে । তাৎক্ষনিক সমাধান এবং দীর্ঘকালীন সমাধান । তাৎক্ষনিক সমাধানের ক্ষেত্রে হয়তো সরকার ভূমিকা নেবে । কয়লার আমদানি বাড়াবে ।কিন্তু সেখানেও সমস্যা কয়লার দাম যেহেতু বর্তমানে বেশি রয়েছে তাই স্বাভাবিকভাবে বিদ্যুতের দামও বেড়ে যাবে । তাঁর মানে মাসের শেষে বিদ্যুতের বিল আকাশ ফুঁড়ে মহাকাশের দিকে এগোবে । যা দেখে আপনার পকেট হবে গরম এবং চোখ হবে চরকগাছ ।
এখন এসব থেকে কি কোনভাবেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় ? দেখুন এর জন্য দরকার দীর্ঘকালীন সমাধান । আর তা হল প্রবহমান শক্তির দিকে নির্ভরতা বাড়ানো । অর্থাৎ তাপ বিদ্যুতের বদলে সৌরবিদ্যুৎ , বায়ুবিদ্যুৎ প্রভৃতি অপ্রচলিত শক্তির দিকে হাত বাড়ানো ।
ভারতের মত দেশে সৌরবিদ্যুৎ সবথেকে বড় ভূমিকা নিতে বাধ্য । এবং একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্ব সাথে আপনার সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা হয়তো আপনাকে মুক্তি দিতে পারে বিদ্যুতের ঘাটতির সমস্যা থেকে ।
আজই নিজের বাড়িতে সৌরপ্যানেল লাগান । মুক্তি পান প্রতিমাসে বিদ্যুতের বিল থেকে । এবং বিশ্বকে দূষণমুক্ত করতে সাহায্য করুন । কারন সৌরবিদ্যুতে কোন দূষণ ঘটে না । সাথে সাথে এর কোন শেষ নেই । সূর্য যতদিন রয়েছে ততদিন এই বিদ্যুৎ রয়েছে । তাই আজ থেকেই নিজের বাড়ির বিদ্যুতের চাহিদা নিজের বাড়িতেই তৈরি করুন । বাড়িতে লাগান সৌরপ্যানেল ।
এখানে হয়তো আপনার সমস্যা হতে পারে আপনি কিভাবে সৌরপ্যানেল লাগাবেন ? কত খরচ পড়বে ? কোথায় থেকে কিনবেন ? ইত্যাদি অনেক প্রশ্ন হয়তো আপনার মনে জাগছে । আপনাদের সুবিধার জন্য আমাদের যোগাযোগ নিচে দিয়ে দিচ্ছি । সেখানে ফোন বা ইমেল করে আপনারা সকল তথ্য পেয়ে যাবেন । এর বাইরে আমি এখানে কিছু লিঙ্ক দিচ্ছি যেখান থেকে আপনারা সব থেকে ভালো সোলার প্যানেল অনলাইনেই কিনে নিতে পারবেন ।
আমার মনে ছোট থেকেই শুরু করুন না ! যদি ভরসা না পান তাহলে বলবো বাড়িতে প্রথমে একটি ১০ ওয়াটের সোলার প্যানেল লাগিয়ে দেখুন । সব মিলিয়ে খরচ পরবে ২৫০০ -৩০০০ টাকা । একবার ব্যবহার করে দেখুন । ভালো লাগলে বড় সোলার প্যানেলের দিকে নাহয় এগোবেন । তবে আমি নিশ্চিত একবার ব্যবহার করলে আগামীতে আপনি সারা ঘরের বিদ্যুৎ সোলার প্যানেল থেকেই তৈরি করবেন । নিচে ১০ ওয়াটের সোলার প্যানেলের লিঙ্ক দিয়ে দিলাম । অনলাইনেই কিনে নিতে পারবেন ।
AMAZON থেকে কিনতে এখানে ক্লিক করুন
সোলার প্যানেল সম্বন্ধিত যেকোন ধরনেরা জিজ্ঞাসা , যেকোন প্রশ্নের জন্য আমাদের ফোন নাম্বারে ও ইমেলে নিদ্ধিধায় যোগাযোগ করুন ।
ল্যান্ডলাইন নম্বর – 03463 296702
ইমেল – contact.niosnews@gmail.com
তথ্যসূত্র – ইন্টারনেট
This post was last modified on May 10, 2023 6:21 pm
Reliance Career 2024 Reliance Career 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা আপনাদের সামনে…
NIRT Job 2024 NIRT Job 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা আপনাদের সামনে…
India Post Vacancy 2024 India Post Vacancy 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা…
IIT Indore Recruitment 2024 IIT Indore Recruitment 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা…
DEO Job Vacancy 2024 DEO Job Vacancy 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা…
IARI Job Vacancy IARI Job Vacancy : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা আপনাদের সামনে…