স্কুল বা কলেজের শিক্ষাপর্ব শেষ করার পরে আর উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হতে পারে। আবার অনেকে এর পরে উচ্চশিক্ষা না নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশ তথা রাজ্যের যা চাকরির পরিস্থিতি, তাতে চাকরির প্রস্তুতি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক পরীক্ষায় বসে যেতে হয়।
চাকরি যে হবেই তার কোনো নিশ্চয়তা কিন্তু কখনোই পাওয়া যায় না। বরঞ্চ বর্তমান সময়ে বলা যায় চাকরির জন্য সময় নষ্ট না করে সামান্য কিছু পুঁজি বিনিয়োগ করে যদি কোনো ব্যবসা করা যায় এবং তার পরিবর্তে একটা মানানসই টাকা মাসের শেষে আয় করা যায়, তাহলে সেই পথ বেছে নেওয়া উচিত।
তার মানে চাকরির প্রস্তুতি বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে না। সেটা চলতে থাকুক। কিন্তু একমাত্র চাকরির দিকে লক্ষ্য রেখেই জীবনের বহু মূল্যবান সময়কে একেবারে শেষ করে দিলে ভবিষ্যতে তার জন্য আফসোস করতে হতে পারে। ফলে জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট না করে এক্ষুনি নিজের পছন্দসই ব্যবসা সম্বন্ধে বিস্তারিতভাবে খোঁজখবর নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই সঠিক পদক্ষেপ।
আর তাই আজকের এই প্রতিবেদনে এমন একটি ব্যবসা সম্বন্ধে আলোচনা করা হবে, যে ব্যবসা করলে একদিকে যেমন খুব সামান্য পুঁজি দিয়ে বিনিয়োগে শুরু করে প্রতি মাসে ভালো টাকা উপার্জন করা যাবে, তেমনি পাশাপাশি এই ব্যবসার মাধ্যমে মানুষকে সহায়তা করা যাবে।
মূলত এই ব্যবসা গ্রামাঞ্চলেই বেশি জরুরী বা প্রয়োজন। তবে যে শহরাঞ্চলে একেবারে করা যায় না তা নয়। বিভিন্ন জায়গায় করা যেতে পারে। এবার জেনে নেওয়া যাক, ব্যবসাটি কি, কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে, কিভাবে শুরু করতে হবে, কোথায় খোঁজখবর নিতে হবে, কত টাকা উপার্জন করা যাবে, এই সম্বন্ধে বিস্তারিত।
যে ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করব, সেটি হল ব্যাংকের সিএসপি (Bank CSP)। যে সমস্ত জায়গায় স্থানীয় ব্যাংকের শাখা কিছুটা দূরে রয়েছে, যেমন গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে, সেই জায়গায় নির্দিষ্ট কোনো ব্যাংকের সিএসপি খুলে ভালো টাকা উপার্জন করা সম্ভব। এসবিআই , পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক সহ একাধিক ব্যাংক সিএসপি খোলার অনুমতি দিয়ে থাকে।
ব্যাংকের CSP কে মিনি ব্যাংক বলা যেতে পারে। যে সমস্ত কাজ একটি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে সম্ভব, সেই সমস্ত কাজই ব্যাংকের সিএসপিতে করা যায়। ফলে এই সিএসপি কতটা প্রয়োজনীয় মানুষের কাছে, সেটা সহজেই অনুমান করা সম্ভব।
সিএসপির ফুল ফর্ম হচ্ছে Customer Service Point বা গ্রাহক সেবা কেন্দ্র।
আগেই বলা হয়েছে CSP এর অর্থ যেহেতু মিনি ব্যাংক, তাই ব্যাংকের সিএসপি নিলে ব্যাংকের সমস্ত কাজ করা যাবে। যেমন – ব্যাঙ্ক আকাউন্ট খোলা থেকে ব্যাংকের টাকা জমা, টাকা তোলা, পাসবুক আপডেট করা, পাসবুক প্রিন্ট করা, চেক জমা দেওয়া, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স চেক করা সহ বিভিন্ন কাজ হয়ে থাকে। ব্যাংকের শাখায় যে সমস্ত কাজ করা যায়, প্রায় সব কাজই সিএসপিতে করা যায়।
অবশ্যই উচ্চমাধ্যমিক পাশ হতে হবে এবং কম্পিউটারের প্রাথমিক জ্ঞান থাকতে হবে।
ব্যাংকের সিএসপি (Bank CSP) নিতে গেলে অন্তত ২১ বছর বয়স হলেই আবেদন করা যায়।
সরাসরি কোনো ব্যাংক সিএসপি প্রদান করেনা। তার জন্য সিএসপি প্রোভাইডার কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। এবার সিএসপি নেওয়ার জন্য জানতে হবে, সেই নির্দিষ্ট ব্যাংকের সিএসপি কোন কোম্পানি দিয়ে থাকে। তবে সাধারণভাবে এই তথ্য জানা সম্ভব নয়।
কোন ব্যাংকের সিএসপি কোন কোম্পানি প্রদান করে, তাই এটা জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে, ব্যাংকে গিয়ে সেই ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে সিএসপি প্রোভাইডার কোম্পানির সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। ব্যাংকের সিএসপি নিতে ইচ্ছুক এই কথা ব্যাংক ম্যানেজারকে বলে তার কাছ থেকে সিএসপি প্রোভাইডার কোম্পানির নাম নিয়ে সেই কোম্পানির কাছে সিএসপির জন্য আবেদন করতে হবে।
১. এই মুহূর্তে সমস্ত চাকরি বা ব্যবসার ক্ষেত্রেই অনলাইনে আবেদন করা যায়। ব্যাংক সিএসপির ক্ষেত্রে অনলাইন এবং অফলাইন দুই মাধ্যমে আবেদন করা যায়। তবে অফলাইনের মাধ্যমে সিএসপির জন্য আবেদন করা তুলনামূলকভাবে ভালো। তার কারণ অনলাইনে বহু সময় প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। আর অফলাইনে আবেদন করলে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি আপনি যাচাই করে দেখে নিতে পারবেন।
২. যে ব্যাংকের সিএসপি নিতে চাইবেন সেই নির্দিষ্ট ব্যাংকের শাখায় গিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলুন স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক বা অন্য যেকোনো ব্যাংক শাখায় যেতে হবে।সেখানে গিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে বিশদে জেনে নিতে হবে। এটাই সিএসপি নেওয়ার সহজ উপায়।
৩. প্রথমেই ব্যাংক ম্যানেজারকে জানাতে হবে, কেন আপনি ব্যাংকের সিএসপি নিতে চান? সেই কারণ বিশদে ব্যাংক ম্যানেজারকে বলতে হবে। কারণ ব্যাংকের সিএসপি হলে ব্রাঞ্চের উপরেও কাজের চাপ অনেকটাই কমে যায়। ফলে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারও আপনার কাছ থেকে বিষয়টি ভালোভাবে বুঝে নিয়ে আপনাকে সাহায্য করবেন। আর ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকলে আপনি সহজেই সিএসপির এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।
৪. ব্যাংক ম্যানেজারের কাছ থেকেই জেনে নিতে হবে ওই ব্যাংকের সিএসপি কোন কোম্পানি দেয়। ম্যানেজারের কাছ থেকে সেটি জানার পরে সেই সিএসপি প্রোভাইডার কোম্পানির কাছে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করবেন।
৫. এই পর্যন্ত জানার পরে হয়তো ভাবছেন খুব কঠিন বিষয়। কিন্তু না। সবচেয়ে সহজ এটি। তার কারণ আপনি ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের কাছ থেকে যে সিএসপি প্রোভাইডার কোম্পানির নাম জানবেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করা খুবই সহজ। কোম্পানির নাম জানার পরে অনলাইনে গিয়ে সেই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন এবং গুগল সার্চে সেই কোম্পানির নাম দিয়ে আপনি এন্টার করলেই তার ডিটেলস, মোবাইল নম্বর, ইমেইল আইডি সব পেয়ে যাবেন। ফলে আপনার যোগাযোগ করতে কোনো সমস্যা হবে না।
ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে CSP প্রোভাইডার কোম্পানির নাম পেয়ে যাবেন। এছাড়াও আপনি আরেকটি পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। সেটি হলো আপনার এলাকায় বা কিছুটা দূরে যেকোনো ব্যাংকের সিএসপিতে গিয়ে যিনি সেই সিএসপি নিয়েছেন তার সঙ্গে একটু কথা বলুন। তার কাছ থেকে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন সিএসপি প্রোভাইডার কোম্পানির নাম।
তিনি যদি আপনাকে দিতে না চান, তাও কোনো চিন্তা নেই। ওই সিএসপির ঘরের যে কোনো জায়গায় দেখবেন সেই কোম্পানির সার্টিফিকেট টাঙ্গানো রয়েছে। ওই সার্টিফিকেটের ছবি তুলে নিন অথবা সার্টিফিকেটে থাকা কোম্পানির নামটা একটু দেখে নিন। তারপরে অনলাইনে এসে সেই কোম্পানির সম্বন্ধে বিশদ পেয়ে যাবেন।
নিজের ঘর হলে ভালো তা না হলে ভাড়ার ঘর হলেও চলবে। ২০০ থেকে ২৫০ বর্গফুটের ঘর লাগবে।
কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ লাগবে।
অবশ্যই ইন্টারনেট কানেকশন চাই।
প্রিন্টার
পাসবুক প্রিন্টার
ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার
ভোটার কার্ড
আধার কার্ড
প্যান কার্ড
যে জায়গায় সিএসপি খুলবেন তার কাগজপত্র
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস
ভাড়ায় ঘর নিলে তার রশিদ
পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
প্রথমেই সিএসপি খোলার জন্য আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই রেজিস্ট্রেশন এর খরচ মোটামুটি ৫ হাজার টাকা থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ, প্রিন্টার, পাস বুক প্রিন্টার, ইন্টারনেট কানেকশন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ইত্যাদি লাগবে। যার জন্য এককালীন টাকা খরচ হয়। প্রথমে যদি সমস্ত জিনিস দামি কিনতে অসুবিধা হয় সে ক্ষেত্রে আপনার কাছে থাকলেও হবে, তা না হলে আপনার আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী কিনে নিতে পারেন।
প্রথমেই জানানো হয়েছে যে এটি একটি ব্যবসা কোনো চাকরি নয়। ফলে মাসিক বেতনের কোনো সিস্টেম নেই এখানে। মূলত কমিশনের ভিত্তিতে আয় করা যায়। এবার কমিশনের কথা বললেই প্রথমে হয়তো মনে হতে পারে সে আর কত টাকা আয় হতে পারে। কিন্তু যারা সিএসপি করেছেন তাদের সঙ্গে একটু আলোচনা করলেই বুঝতে পারবেন সিএসপি থেকে যথেষ্ট ভালো পরিমাণ কমিশন তোলা সম্ভব।
নির্দিষ্ট ব্যাংকের হয়ে যত বেশি পরিমাণে কাজ করতে পারবেন তত বেশি আপনার ইনকাম বাড়বে। ব্যাংকের মতো টাকা লেনদেন ছাড়া ব্যালেন্স চেক করা, ব্যাংকের এফডি করে দেওয়া, নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করা এই সমস্ত কাজই সিএসপিতে হয়ে থাকে।
দিনে একটি সিএসপিতে যদি ১ লক্ষ টাকার লেনদেন হয় তাহলে মোটামুটি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা যায়।
সিএসপিতে টাকা তোলা এবং টাকা জমা করার ক্ষেত্রে ০.০৪ থেকে ০.০০৬ শতাংশ হারে কমিশন দেওয়া হয়।
কোনোদিন সিএসপিতে যদি ২ লক্ষ টাকার লেনদেন হয় তাহলে ১ হাজার টাকা আয় হবে।
লেনদেনের এই কমিশন ছাড়াও ইন্সুরেন্স পলিসি, ফিক্সড ডিপোজিট, চেক ডিপোজিট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ব্যাংক পাস বুক আপডেট ইত্যাদি সমস্ত কাজের জন্য ব্যাংক আলাদা আলাদা করে কমিশন দিয়ে থাকে।
AISECT Limited.
Reliance Payment Solution Limited.
Easy Bill Private Limited.
Alankit Limited.
CSE e Governance.
Unique Social Equality.
Pay Point India Pvt.Ltd.
যদি আপনার এই প্রতিবেদনটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই খবরটি শেয়ার করবেন । আপনি চাইলে আমাদের Whatsapp গ্রুপে যুক্ত হতে পারেন ।সেখানে নিয়মিত শিক্ষা, চাকরি , ব্যবসা , চাষবাস , সরকারি প্রকল্প , ব্যাঙ্ক তথা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন্ডিং খবরের আপডেট পেয়ে যাবেন ।
This post was last modified on January 13, 2023 12:21 pm
IIT Indore Recruitment 2024 IIT Indore Recruitment 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা…
DEO Job Vacancy 2024 DEO Job Vacancy 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা…
IARI Job Vacancy IARI Job Vacancy : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা আপনাদের সামনে…
GIRHFWT Recruitment 2024 GIRHFWT Recruitment 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা আপনাদের সামনে…
NVS Vacancy 2024 NVS Vacancy 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা আপনাদের সামনে…
Driver Job vacancy 2024 Driver Job vacancy 2024 : বন্ধুরা কর্মসাথী ডট কমের আরও একটি প্রতিবেদনে আপনাদের স্বাগত জানাই । আমরা…